Alma Mater
#pennstate
#statecollege
#statistics
শব্দটা ল্যাটিন হলেও আমরা সবাই এর সঙ্গে পরিচিত। আমাদের স্কুল, কলেজ বা ইউনিভার্সিটিকে আদর করে এই নামে ডাকি। Dear Mother. Nourishing Mother. আমাদের শরীরকে পুষ্টি না যোগালেও, মনকে পুষ্টি যোগায়। আজকাল অবশ্য যা দেখি চারদিকে, ছেলে-মেয়েদের মানসিক পুষ্টি যোগাতে গিয়ে, বাবা-মা’র শারীরিক পুষ্টিতে ঘাটতি পড়ে কি না তা চিন্তার বিষয়। ক্লাস থ্রি থেকে ফাইভ পর্যন্ত আমার স্কুল ছিল ফ্রি, সিক্স থেকে টেন পর্যন্ত মাসে ১০/- টাকা। আবার ইলেভেন-টুয়েলভ ফ্রি। তিন বছর কলেজে মাইনে ছিল মাসে ১৫/-, আর দু বছর ইউনিভার্সিটিতে মাসে ১৭/- টাকা। এখন তো দেড় বছুরেদের খেলতে যাওয়ার মাইনে কয়েক শ’ টাকা। কিংবা কয়েক হাজার! কে জানে?
তার সঙ্গে যোগ কর যাতায়াতের খরচ। আমরা পড়তাম পাড়ার স্কুলে। হেঁটে যাওয়া, হেঁটে আসা। কলেজটাও আমার হাঁটাপথের মধ্যেই ছিল। বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে পড়ার সময় দু-বেলা বাসে করে যাতায়াত করতে হত। এখন বাচ্চারা রোজ স্কুলে যায় হাওড়া থেকে নিউ টাউন আর ব্যারাকপুর থেকে গড়িয়া। কেন কে জানে? আরো একশ বছর পরে হয়ত দেখা যাবে ক্লাস নাইনের ছেলেমেয়েরা কলকাতা থেকে রোজ দিল্লি যাচ্ছে স্কুলে পড়তে! আমি অবশ্য দেখব না, কারণ আরো একশ বছর আমি বেঁচে থাকব না।
সে যাই হোক, কথাটা হচ্ছিল মানসিক পুষ্টি নিয়ে। পাড়ার স্কুল হলেও দিদিমণিরা আদর দিয়ে বাঁদর করেননি। পঞ্চাশ বছর আগে তা সম্ভবই ছিল না! মানে ক্লাসে দুষ্টুমি করলে পিঠে দু-এক ঘা না পড়লেও, বকুনির অভাব হত না। মিশনারী স্কুলে আবার বকুনির জন্য ছুতো ছিল অনেক। স্কার্টের ঝুল, বডিসের টাইটত্ব, কাঠের সিঁড়িতে শব্দ না করা, ইত্যাদি অনেক কারণ, এবং আরো অনেক অকারণ, আকচারই পাওয়া যেত। আর আমি ঠিক ভালো মেয়ে যা বলে, তা তো ছিলাম না। আমাদের একটা Moral Science-এর ক্লাস হত। না কি বাইবেলের ক্লাস। কিছু একটা ব্যাপারে আমি ফাদারের সঙ্গে তর্ক করে সেই ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বন্ধুরা যখন ক্লাসে যেত, আমি লাইব্রেরি বা আর কোথাও বসে থাকতাম। একবার আমাদের ড্রিলের ক্লাসে দিদিমণি আসেননি। আমরা নিজেরাই মহোৎসাহে ড্রাম বাজিয়ে মার্চ পাস্ট প্র্যাকটিস করলাম। ফলাফল ভালো হল না। সমস্ত স্কুলকে ডিসটার্ব করছি বলে পুরো ক্লাস শাস্তি পেলাম। তাতে আমাদের চারিত্রিক উন্নতি হয়েছিল, এরকম অপবাদ আজ পঞ্চাশ বছর পরেও কেউ দিতে পারবে না।
স্কুলের এত মজা সত্বেও Enid Blyton-এর Malory Towers পড়তে পড়তে মনে হত, আহা, এমন একটা স্কুলে পড়লে কি মজাই না হত। কত খেলার মাঠ, আশে পাশে কত সারা দিনের মত বেড়িয়ে পড়ার বন-বাদাড়, একটা swimming pool-ও আছে যেখানে সমুদ্রের ঢেউ চলে আসে, এমন কি যারা পোষা কুকুরও রাখতে দেয়। নলিনী দাশের গোয়েন্দা গন্ডালু পড়েও মনে হত, আহা রে, মালু-কালু-বুলু-টুলুর কি মজা! স্কুলের চৌহদ্দির মধ্যে অনেক জায়গা, আর পড়াশোনা ছাড়াও আরো অনেক কিছু শেখার সুযোগ – এই দুটোর জন্য মনটা আঁকুপাঁকু করত।
আমি যখন ক্লাস থ্রি-তে পড়ি, বাবা-মা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু দিনের জন্য কাজ নিয়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে না হলেও, পুজোর পরে আমিও গেলাম। সেটা ১৯৭১ সালের কথা। বড় ক্যাম্পাস, সামনেই পাহাড়, কার্শিয়াং-এর আলো দেখা যাচ্ছে, আর পেছনে ধানক্ষেত। ক্যাম্পাস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সেই প্রথম পরিচয়। আর ঘনিষ্ঠ পরিচয় হল যখন PhD করতে গেলাম Penn State-এ।
আজকাল বিলেত-আমেরিকায় পড়তে যাওয়াটা জলভাত। ১৯৮৭ সালে তা ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা হল, তখন আমরা বাড়িতে বসে বিদেশ সম্বন্ধে এতো কথা জানতে পারতাম না। বিদেশ, মানে বিভূঁই। কালাপানি পার হয়ে গেলে একটা culture shock অপেক্ষা করত। তার ভালো-মন্দ দুটো দিক আছে ঠিকই, কিন্তু বিদেশ যাত্রার romanticism-টা নষ্ট হয়ে গেছে। তখন ভাবতাম আমেরিকা হল ইঁট-কংক্রিটের জঙ্গল, সারা দেশটাই বুঝি New York City। কিন্তু ফিলাডেলফিয়া থেকে State College যাবার পথে দেখলাম সবুজ মাঠ, পাহাড়, ঝকঝকে নীল আকাশ আর ছোট ছোট গ্রাম। ছায়া সুনিবিড় কি শান্তির নীড় – jet lag-এর ঠ্যালায় সে কথা ভাববার অবসর হয়নি। এমন কি State College-এ পৌঁছেই যে অমন একটা Arby’s roast beef sandwich খেলাম, তা পর্যন্ত ভালো করে আস্বাদন করতে পারলাম না।
দুদিন পরে Statistics Department-এ গিয়ে একটা ঘরে একটা টেবিল দখল করলাম। দুটো চাবি পাওয়া গেল – একটা ডিপার্টমেন্টে ঢোকার, একটা ঘরে ঢোকার। যে কোনো দিন যে কোনো সময়ে ঘরে ঢুকতে পারব, কাউকে কোনো কৈফিয়ত দিতে হবে না! সারি সারি কম্পিউটার টার্মিনাল – যত খুশি ব্যবহার কর। সেটা main frame-এর যুগ, ইন্টারনেট নেই, arpa net কথাটাও তখনও কানে আসেনি। আমি গেছি কলকাতা ইউনিভর্সিটি থেকে, যেখানে আমাদের Fortran programming শেখানো হত খাতায় লিখে। কী-বোর্ড কখনো ব্যবহার করিনি। শুনে আমার অমেরিকান বন্ধুরা চেয়ার থেকে পড়ে যায় আর কি! Statistics Department তখন ছিল Pond Laboratory-তে। পুকুরের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। Pond নামটা এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের নামানুসারে। পুরনো বাড়ি, central heating নেই, লিফ্ট নেই, মোটা মোটা পাইপের ভেতরে গরম জল দিয়ে ঘর গরম করার ব্যবস্থা। ঠং ঠং করে আওয়াজ হত পাইপগুলো ঠান্ডা আর গরম হওয়ার সময়। ঠান্ডা-গরম বিশেষ নিয়ন্ত্রণ করা যেত না। সকাল বেলা ঘরগুলো ফর্নেস হয়ে থাকত, যে প্রথম ঘরে ঢুকত তাকে সব জানলা খুলে ঘর ঠান্ডা করতে হত। বাইরে যদি 6 ফারেনহাইট, তো ভেতরে 90।
Pond Lab in 1987
Professor William Harkness ছিলেন Department Chair, খানিকটা Santa Claus-এর মত চেহারা, এমন কি একটু সাদা দাড়িও আছে। হাসিখুশি খোলা মেলা মানুষ। আমরা যারা Teaching Assistant হয়ে গেছি, ক্লাস নেব, ইউনিভর্সিটিতে পৌঁছে তাদের একটা English Speaking and Listening পরীক্ষা দিতে হত। তা আমি তো সেটায় ফেল করলাম। University-র Graduate School বলল একটা ইংরেজি ক্লাস নিতে হবে। কাঁচুমাচু মুখে Professor Harkness-কে বলতে হল। উনি মুচকি হেসে বললেন, তুমি তো ইংরেজি শিখতে আসনি এদেশে, statistics শিখতে এসেছ। যা ইংরেজি বল, তাই যথেষ্ট, আর কোনো ক্লাস করতে হবে না।
State College জায়গাটা Pennsylvania-র একেবারে center of gravity-তে। County-র নামই হল Center County। নাম শুনলেই বোঝা যায় এটা একটা University Town। কিন্তু ইউনিভার্সিটির ঠিকানা হল University Park। President Eisenhower-এর ভাই Milton Eisenhower এখানে থাকতেন। State College নামটা নাকি তাঁর খুব অপছন্দ ছিল। একবার তিনি রেগে গিয়ে বলেছিলেন, I refuse to receive my letters in State College. যতই হোক প্রেসিডেন্টের ভাই। তখন শুধু ইউনিভার্সিটি এলাকার zip code আর নাম বদলে দেওয়া হয়েছিল। Milton Eisenhower-এর নামে Penn State-এ একটা auditorium আছে, সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে performer-রা আসেন। ছাত্রদের পক্ষে টিকিটের দামটা বেশী, কিন্তু বছরে একটা-দুটো অনুষ্ঠান দেখাই যায়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পড়াশোনা হত না একেবারে, তা আমি বলতে পারি না। প্রেসিডেন্সী কলেজ আর কলকাতার Statistics Department-এ অন্তত তিনজন মাষ্টার মশায়ের নাম বলতে পারি যাঁদের মত শিক্ষক পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। এখন তিনজনই এক এক করে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তা সত্বেও বলব Penn State-এ ছাত্রাবস্থায় যে আনন্দে ছিলাম, তা এদেশে অকল্পনীয়। সেখানে শিক্ষকরা শুধু ক্লাসে লেকচার দেন না, তাঁরা কফির কাপ হাতে গল্প করেন। শুক্রবার সিনিয়র, জুনিয়র ছাত্রছাত্রী আর অল্পবয়সী মাষ্টারমশাই সবাই মিলে চলল বারে বিয়ার খেতে। সকালে যারা পাঠ দিলেন আর যারা পাঠ নিল, দিনের শেষে তারাই একসঙ্গে চলল দৌড়তে। জায়গাটা University Town বলেই হয়ত এ ধরনের ঘনিষ্ঠতা তৈরী হওয়া সম্ভব হয়েছিল।
তাছাড়া একাধিক বার বিভিন্ন মাষ্টার মশায়ের বাড়ি নিমন্ত্রিত হয়েছি। Professor Tom Hettmansperger পড়াতেন Nonparametric Statistics। সেমেস্টার শেষে সব ছাত্র আর তাদের significant other-কে বাড়িতে ডিনার খাওয়াতেন। মেনু অবশ্য একই থাকত প্রতি বার – lasagna আর বিয়ার। আর একজন ছিলেন Professor Hultquist। তাঁর একটা ফার্ম ছিল ইউনিভার্সিটি থেকে বেশ খানিকটা দূরে। ক্রিসমাসের আগে তাঁর বাড়িতে পার্টি হত, Christmas Carol গাওয়া হত। ওনার ফার্মের zucchini আর ওই রকম কি সব যেন একবার অনেক এনে ডিপার্টমেন্টের কফিরুমে রেখে দিলেন। যে চাও নিয়ে নাও। আমি তখন এগুলো কিছুই চিনি না। কয়েকটা বাড়ি নিয়ে এসে রান্না করলাম। উনি আবার পরে জিজ্ঞাসা করলেন ভারতীয় মতে কি ভাবে রান্না করলাম।
Penn State-এ পড়ানোর পদ্ধতিও দেখলাম একেবারেই আলাদা। এখন তো কলেজ থেকেই সেমেস্টার, আমাদের সময় তো তা ছিল না। দু-বছর পরে পরীক্ষা, সুতরাং টেস্টের পরের তিন মাস পড়লেই চলে যেত। রেজাল্ট যা হওয়ার তা হত, কিন্তু শেখা কতটা হত তাতে গভীর সন্দেহ। অনেকটাই মুখস্থবিদ্যা। Penn State-এ দেখলাম ক্লাসে এক বোর্ড theorem, lemma আর proof না লিখে খানিকটা বুঝিয়ে, home task দেওয়া হল। বাড়ি থেকে অঙ্ক করে আনতে হবে! Graduate student-দের জন্যে office ছিল – একাধিক বড় বড় ঘরে একটা টেবিল, একটা চেয়ার, বুককেসের অংশ, সেখানে তুমি তোমার পড়ার বই, গল্পের বই সবই রাখতে পার। ডিপার্টমেন্টই ছিল আমাদের ঘরবাড়ি। স্নান করতে আর ঘুমতে বাড়ি যেতে হত। বাদবাকি সময়টা ডিপার্টমেন্টেই কাটত – পড়িয়ে, খাতা দেখে, homework করে, ক্লাস করে, আড্ডা দিয়েও।
In my ground floor office
University-তে নানান ব্যাপার লেগেই থাকত। Spring Semester-এ University Women’s Association একটা book sale-এর ব্যবস্থা করতেন। এক ব্রাউন পেপার ব্যাগ পুরনো বইয়ের দাম হয়ত দু-ডলার। সে ব্যাগে তুমি একটাই বই নাও বা একশটা। ব্যাগ ছিঁড়ে না যাওয়া অবধি তুমি তাতে বই ভরতে পারো। এইরকম একটা সেল থেকে অয়ন প্রচুর বই কিনেছিল। সেগুলো অফিসেই ছিল। শ্রীনিবাস বলে একটি ছেলে ক্রিসমাসের ছুটিতে ক্যানাডা যাবে, অয়নকে জিজ্ঞাসা করল,
“আমি কি তোমার কাছ থেকে একটা বই ধার নিতে পারি”?
অয়ন বলল, “হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। কিন্তু মনে করে ফেরত এনো”।
সে তো আকাশ থেকে পড়ল, “ফেরত দিতে হবে”?
“সে কি! বই নেবে, ফেরত দেবে না”?
“না, মানে, ফেরত দিতে হলে আমাকে extra mindful থাকতে হয়; আর তা হলেই আমি বই হারিয়ে ফেলি”।
মনে হয় না এমন অদ্ভুত যুক্তি শুনে তাকে আর বই ধার দেওয়া হয়েছিল।
তখন ডিপার্টমেন্টে আমরা তিনজন ভারতীয় ছাত্র – অয়ন গেছে ১৯৮৬-তে, শ্রীনিবাস আর আমি গেছি পরের বছর। সারা Penn State-এই বাঙালী ছাত্রের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। বাংলাদেশী ছাত্রের অস্তিত্বই ছিল না। দেশে ফোন করা ছিল একটা বিরাট ব্যাপার। শনি-রবিবার সারাদিন আর অন্য দিন অনেক রাতে ছাড়া ভারতবর্ষে ফোন করা সম্ভব ছিল না graduate student-দের পক্ষে। অতএব চিঠি ভরসা। আমাদের বাড়িতে ডিপার্টমেন্টের ঠিকানা দেওয়া ছিল, চিঠি ওখানেই আসত। প্রতিদিন বিকেল তিনটে নাগাদ একটা সবুজ প্ল্যাস্টিকের বড় বাস্কেটে করে পোস্ট অফিস থেকে চিঠি ডিপার্টমেন্টের অফিসে পৌঁছে দিত। ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি ডরোথী একটু পরে এসে যার যার cubby hole-এ চিঠিগুলো ভরে দিয়ে যেত। অনেক সময়েই ডরোথী আসার আগেই আমি বাস্কেটটা হাতড়ে আমার চিঠিগুলো বার করে নিতাম। একদিন Professor Harkness দেখে ফেললেন, “Oh, do we have a new postal delivery person here today?” একদিন আর একজন faculty Jim Rosenberger বলে বসলেন, “Looks like you are hunting for letters from your boyfriend!”
এই লেখাটা শুরু করেছিলাম মানসিক পুষ্টির কথা বলে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, technical teaching, management teaching, on-line, off-line এদেশ, বিদেশের নানান institution-এর সঙ্গে সেই চার বছর বয়স থেকেই তো যুক্ত আছি – হয় পড়ছি, নয়তো পড়াচ্ছি। তা নয় নয় করে ষাট বছর তো প্রায় হল। Penn State-থেকে পাশ করে বেরিয়ে গেছি তাও তিরিশ বছর হয়ে গেছে। আজকাল মনে হয়, যাকে মুখস্থ বিদ্যা বলে, learning by rote, তারও একটা দাম আছে। আমি যখন প্রেসিডেন্সী কলেজের Statistics-এ ভর্তি হয়েছি, অধ্যাপক অতীন্দ্রমোহন গুণ তখন বিভাগীয় প্রধান। অসাধারণ শিক্ষক এবং অনমনীয় disciplinarian। ভালবেসেও বটে, আবার বকুনির ভয়েও বটে, পড়াশোনা করতেই হত। কিন্তু অনেক কিছুই আমরা সাধারণ ছাত্ররা না বুঝেই মুখস্থ করতাম। পরীক্ষায় উগরে দিয়ে মোটামুটি ভাল ভাবে পাশও করে যেতাম। বহু বছর লেগেছে মুখস্থ করে রাখা প্রতিপাদ্য বিষয়ের যৌক্তিকতা উপভোগ করতে। খুব মেধাবী ছাত্ররা হয়ত তখনই সব বুঝে যেত। তবে তাদের সংখ্যা তো আঙুলে গোনা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা-সমুদ্র তো পুরো নাকানি-চোবানি খেয়ে উদ্ধার হতে হল। তারপরে সাগর পাড়ি।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান আকর্ষণ হল মুক্ত বাতাস। সিলেবাসে বাঁধন নেই। মোটামুটি একটা আলগা recommendation থাকে, কিন্তু তার মধ্যেও যথেষ্ট স্বাধীনতা। চাইলে, শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে তুমি সম্পূর্ণ অন্য বিভাগের কোর্স নিতে পারো। প্রশ্ন করার অবাধ স্বাধীনতা, ইচ্ছেমত গবেষণা করার অবাধ স্বাধীনতা। কিন্তু আমার বারবারই মনে হয়েছে, এখন আরো বেশী করে মনে হয়, এই চিন্তার স্বাধীনতা অর্জন আর উপভোগ করতে পেরেছিলাম, তার আগের পাঁচটা বছর অতটা rigour-এর মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম বলেই। ডানা শক্ত হলে তবেই না উড়তে পারা যায়!
Penn State তো শুধু Alma Mater নয়, State College আমার Second Home। সেখানকার বন্ধুবান্ধবদের কথা আর একদিন হবে।
Alma Mater
Tor ei life tar kotha bises Jani na. Tai khub enjoy korlam. Tui nischoy TOEFL clear kore giechili. Tar por o English exam dite holo?
Soma Gupta
20-10-2024 06:49:49