জামাইষষ্ঠী


#jamai #shasthi #brata

আহ্লাদে যায় গড়াগড়ি| 
আমি যাব শ্বশুরবাড়ি|

বাঙালী বাড়িতে মা ষষ্ঠীর পুজো বা ষষ্ঠীব্রত একটি প্রধান ব্রত, যার উদ্দেশ্য ষেটের বাছাদের সংখ্যাবৃদ্ধি আর মঙ্গলকামনা| মা ষষ্ঠীর বাহন যে বেড়াল, তার তাৎপর্যও পরিষ্কার| খরগোসও হতে পারত হয়ত, তবে বাংলাদেশে খরগোস বোধহয় অত পরিচিত প্রাণী নয়| আমার ঠাকুরমা-দিদিমাদের আমলে, অর্থাৎ যাঁদের জন্ম মোটামুটিভাবে বিংশ শতকের প্রথম দিকে, একেবারে ফিরিঙ্গি-ভাবাপন্ন না হলে, প্রায় সব বাড়ির মহিলাই ষষ্ঠী করতেন| ষষ্ঠীর দিনে আমিষ ভক্ষণ নিষিদ্ধ| আধুনিকারা এখন আর সব মাসে ষষ্ঠী করেন কি না তা বলতে পারি না, তবে জামাইষষ্ঠীর কথাই আলাদা| বছরের এই একটি দিনের তিথি-নক্ষত্র সম্বন্ধে নব-বিবাহিত জামাতা আর ফ্যাশন-দুরস্ত শ্বশ্রূমাতা – উভয়েই দেখি অত্যন্ত সচেতন| আর এখন তো জামাইষষ্ঠী পালনে সরকারি ছুটি, অন্তত অর্ধ-ছুটি পেতেও কোনো অসুবিধে নেই|

          আমার সংগ্রহে যে কটি পুরণো বাংলা ব্রতকথা সংকলন রয়েছে, সেগুলিতে কিন্তু জামাইষষ্ঠী ব্রত একদমই প্রাধান্য পায়নি| বাংলা ১৩১৫ (ইং ১৯০৮-৯) সালে প্রকাশিত শ্রী পরমেশপ্রসন্ন রায়, বি. এ, সংকলিত মেয়েলি ব্রত ও কথাতে জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লাষষ্ঠীতে করণীয় অরণ্যষষ্ঠীর উল্লেখ রয়েছে| এই মাসে ফল-শ্রেষ্ঠ পক্ক আমের আধিক্য বশতঃ আম্রফল নৈবেদ্যের প্রধান উপকরণ| এজন্য চলিত কথায় ইহার অপর নাম আম-ষষ্ঠী ব্রত| শ্রী রামপ্রাণ গুপ্ত সংকলিত ব্রতমালা গ্রন্থে (বাংলা ১৩১৪ প্রকাশিত) ঐ আমষষ্ঠী ব্রত নামটিই রয়েছে| ১৩১৯ সালে প্রকাশিত শ্রীমতী কিরণমালা দাসী সংকলিত ব্রত-কথায় না আছে অরণ্যষষ্ঠী, না আমষষ্ঠী| এই তিনটি সংগ্রহ ময়মনসিংহ,  ঢাকা-মানিকগঞ্জ, কান্দি মহকুমা – এই সব অঞ্চলের| সম্ভবত জামাইষষ্ঠী এসব অঞ্চলে বিশেষ প্রাধান্য পেত না| আমার মামাবাড়ি বরিশাল| শুনেছিলাম সেখানেও জামাইষষ্ঠীর প্রচলন নেই|

          আমার অনুমান আজকের জামাইষষ্ঠীর রমরমা কলকাতা শহরের অবদান| গ্রাম বাংলায় জমিদার বা ধনী গৃহস্থ বাড়িতে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে কন্যা-জামাতাকে সমাদর করার প্রচলন থাকতে পারে, কিন্তু সাধারণ গৃহস্থ বাড়িতে সেটা নানা কারণে সবসময়ে সম্ভব হযে উঠত না| অনেক সময়েই মেয়ের বিয়ে হত অনেক দূরে, মেয়ে-জামাই আনা একটা বড় খরচের ধাক্কা, আর মেয়ে-জামাইও তো একটি নয়! বিশেষ করে জামাতা বাবাজীদের সামনে যে যে সুখাদ্য দেওয়া হত – তার মধ্যে প্রধান হল নানারকম আমিষ পদ, ইলিশ, চিংড়ি, খাসীর মাংস – তার ব্যবস্থা করা যথেষ্ট ব্যয়বহুল ও জটিল|

আরো লক্ষণীয় হল এই যে, বাড়ির গূহিণী কিন্তু ষষ্ঠীব্রতধারিণী, তিনি ভুলেও আমিষ মুখে তুলবেন না| ব্রতমালা সংকলনে আমষষ্ঠীর ব্রতকথায় আছে, মনের ভুলে গৃহকর্ত্রী চিতল মাছ খেয়ে ফেলেছিলেন বলে তাঁর ষাট নাতি একসঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল|

অরণ্যষষ্ঠী বা আমষষ্ঠী থেকে জামাইষষ্ঠী এল কি করে? বাংলা লৌকিক ব্রতর সঙ্গে এক একটা গল্প জড়িত থাকে| এই ব্রতের গল্পগুলি বিভিন্ন বইতে একটু একটু আলাদা, কিন্তু কোনোটাতেই জামাইকে কেন ঐ জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লাষষ্ঠীতে বিশেষ ভাবে সমাদর করতে হবে তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না| একমাত্র বারোমেসে মেয়েদের ব্রতকথা বইটিতে জামাইষষ্ঠীর গল্পে প্রক্ষিপ্তভাবে একটুখানি জামাইয়ের দেখা পাওয়া যায়! এই বইটির যে সংস্করণ আমার কাছে আছে তা ১৩৯৩ অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত; প্রথম সংস্করণ কোন সালে তা বলা নেই| জামাইষষ্ঠীর বাড়বাড়ন্ত যে আধুনিক কালে এবং শহরে, একে কি তার একটা পরোক্ষ প্রমাণ বলা যেতে পারে?

          ষষ্টীবাটা ছেড়ে একটু অন্যদিক থেকে এবার শ্বশুরবাড়ীতে জামাই-আদর কেমন হয় দেখা যাক|

বিয়ে যে কোনো সমাজেই একটি বিশিষ্ট ঘটনা| বাঙালি সমাজে আবার লাখ কথার কমে বিয়ে হয় না| জামাইয়ের আগমনে শ্বশুরবাড়িতে সকলে তটস্থ, পাছে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় জামাই-আদরে কোনো বৈলক্ষণ্য ঘটে| একটা প্রচলিত লোকছড়ায় জেঠা-ভাইপোর কথোপকথনে তার একটা বর্ণনা রয়েছে|

হ্যাঁগো জ্যাঠা, শ্বশুরবাড়ি কি রসুইয়ের ঘটা|

যাওয়া মাত্র আয়না, তেলের বাটি, কিবা আসনের পরিপাটি|

মাটি, তায় জল ছড়িয়ে তাতে পেতে শীতলপাটী|

কেউ জ্বেলেছে চুলো, ঝাড়ছে চালের গুঁড়ো|

খেয়ে-দেয়ে রইলাম বসে সকল বর্তমান

শাশুড়ী তৈরী করে পাঠাইলেন পান|

শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার প্রসঙ্গে কিন্তু জামাইয়ের দিক থেকেও যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকত| যেমন-তেমন ভাবে তো আর নতুন শ্বশুরবাড়ি যাওয়া যায় না!

সাবান মেখে ফরসা হবো, মাথায় কাটব লম্বা টেরি

আহ্লাদে যায় গড়াগড়ি

আমি যাব নতুন শ্বশুরবাড়ি|

জামাইয়ের মনেও স্ত্রী আর তার পরিবারবর্গকে যথোপযুক্ত প্রভাবিত করার বাসনা যথেষ্টই থাকত| শালী-শালাজ মহলে মহাশয়ের কেমন অভ্যর্ধনা জুটবে তা নিয়ে টেনশন থাকাও অস্বাভাবিক নয়| বাংলা লোক-ছড়া, যাকে সাধারণ ভাবে ছেলেভুলানো ছড়া বলা হয়, তা হল সমাজের আয়না| সংসারের সব সম্পর্কেরই প্রতিফলন সেখানে রয়েছে – কখনো অম্ল-মধুর, কখনো নির্ভেজাল হাস্যরস, কখনো বা শাণিত ব্যাঙ্গে রসানো|

          একশ-দেড়শ বছর আগেও বাংলার গ্রামে বাল্যবিবাহ চালু ছিল| পুতুলখেলার বয়সী মেয়ের সঙ্গে পাঠশালার পড়ুয়া ছেলের বিয়ে ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা| এমন কি শিশুকন্যার সঙ্গে পঞ্চাশোর্ধ প্রৌঢ়ের বিবাহও যে একান্ত বিরল ছিল তা নয়| যৌথ পরিবারের কারণে বিবাহ ঘটনাটি শুধু দুটি নরনারীর ব্যক্তিগত ব্যাপার না হয়ে, দুটি বিশাল পরিবারের যোগসূত্র রূপে পরিগণিত হত| অনেক সময়েই পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপনই হত মুখ্য উদ্দেশ্য, বর বা কনে হয়ে পড়ত গৌণ| বাঙালি সমাজে ছেলে বা মেয়ের বিয়ে, বিশেষ করে মেয়ের বিয়ে, ছিল পিতৃপক্ষের সামাজিক অবস্থান সুরক্ষিত করার একটা উপায়|

          এই সবের প্রতিফলন ঘটেছে ছেলেভুলানো ছড়ায়| ভাবী শ্বশুরবাড়িতে তাঁদের খোকনসোনা কেমন আদর পাবে, তা নিয়ে মা-মাসি-পিসিরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন থাকতেন|

হ্যা দ্দেখে যা কনের বাপ            কোনখানটা খাঁদা নাক?

খাঁদা কি বলতে দেব?

সোনা দিয়ে নাক বাঁধিয়ে দেব|

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে ছেলে মানেই তো হীরের টুকরো, তার আবার অনাদর কি করে হয়? কিন্তু মহিলামহলে মনে হয় বেমানান জামাইকে নিয়ে কৌতুকস্রোত, কেবল মাত্র কন্যা পাত্রস্থ করার গৌরব দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যেত না|| শুধু খ্যাঁদা নাক নয়, কালো জামাই নিয়েও পাত্রপক্ষ যেন কিঞ্চিৎ বিব্রত থাকত| সুন্দরী কন্যার পাশে বেমানান বরকে নিয়ে প্রতিবেশীদের মধ্যে হাসাহাসির ধুম পড়ে যেত| যত বড় মান্যিমান আর গুরুগম্ভীর ব্যক্তিই হন না কেন, মেয়েদের ঠাট্টাতামাশাকে অগ্রাহ্য করা কারোর সাধ্য ছিল না|

বর দেখে যাও, বর দেখে যাও                রান্নাঘরের ঝুল

কনে দেখে যাও, কনে দেখে যাও             কনকচাঁপার ফুল

হয়ত সেই জন্যেই কালো খোকার মা সান্তনা পেতেন এই বলে

শাশুড়ি এসে বলে, ‘জামাই কেমন, না কালো’|

শ্বশুর এসে বলে, ‘জামাই ঘর করেছে আলো’|

 

মেয়ের বিয়ে দেবার পর থেকে জামাইকে নিয়ে বাড়ির বালিকামহলে নির্দোষ কৌতুক চলতেই থাকে|

জামাই বাবু, জল সাবু, পাতিলেবু|

ইষ্টিশানের মিষ্টি কুল, শখের বাদাম গোলাপ ফুল|

কেউ হয়ত আবার দিদির পক্ষ নিয়ে জামাইবাবুর কাছে অনুরোধ করত

জামাই বাবু, জামাই বাবু, কমলা লেবু

একলা খেয়ো না|

দিদি আমার ছোটো ছেলে, কিছু জানে না|

কিন্তু সব রঙ্গতামাশা জামাইয়ের পক্ষে সমান উপভোগ্য হত বলে মনে হয় না|

ও জামাই খেয়ে যা রে সাধের নতুন তরকারি|

শিল ভাতে নোড়া ভাজা কোদাল চড়চড়ি|

এহেন গুরুভোজনের প্রয়োজন কেন হয়েছিল? জামাতা বাবাজীবন কি শ্বশুরবাড়িতে নতুন ব্যঞ্জনের জন্য আব্দার ধরেছিলেন?

          এখানে একটা কথা মনে রাখা খুব দরকার| মেয়ের বিয়ে হত কুল-গণ-পঞ্জিকা মিলিয়ে পুরুষদের সিদ্ধান্তে| সে প্রসঙ্গে বাড়ির মেয়েদের কোনো বক্তব্য গ্রাহ্য হত বলে মনে হয় না| অযোগ্য পাত্রে কন্যা সম্প্রদানের ক্ষোভের আঁচ হয়ত প্রকাশ পেত জামাইকে উপহাসাস্পদ করে তুলে| জামাইয়ের নির্বুদ্ধিতা তাকে শ্বশুরবাড়িতে মানসম্মান দিত না মোটেই|

মা গো মা, তোমার জামাই এসেছে,

কচুপাতাটি মাথায় দিয়ে নাইতে নেমেছে|

তেল মাখতে তেল দিইছি, ফেলে দিয়েছে

আক্ কাটতে ছুরি দিইছি, নাকটি কেটেছে

পা ধুইতে জল দিইছি, খেয়ে ফেলেছে

বসবে বলে পিঁড়ি দিইছি, শুয়ে পড়েছে|

জামাইয়ের শরীরে কোনো খুঁত বা অঙ্গহানি থাকলে, তার আদর কমে|

সকল জামাই এল আমার খোঁড়া জামাই কই?

ওই আসছে খোঁড়া জামাই ডুগডুগি বাজিয়ে|

ভাঁড়ার ঘরে শুতে দিলুম ইঁদুরে নিল কান

কেঁদ না কেঁদ না জামাই, গোরু দেব দান|

যে জামাইকে ভাঁড়ার ঘরে শুতে দেওয়া যায় এবং ইঁদুরে কান নিয়ে গেলেও গরু দিয়ে অনায়াসেই প্রবোধ দেওয়া যায়, তার আত্মসম্মানবোধ সম্বন্ধে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন| বোকা জামাই, বুড়ো জামাই, কালো জামাই, খোঁড়া জামাই – শ্বশুরমশাই তাদের হাঁটু ধরে কন্যা সম্প্রদান করলেও মেয়েদের মধ্যে তাদের বিশেষ কদর ছিল না| শাণিত বিদ্রূপ ছিল তাদের পাওনা| কৃপণ জামাইকে শুনতে হত

গেঁড়ী বউ দরজা খোল, জামাই এসেছে|

চিংড়ি মাছের খোলায় করে গয়না এনেছে|

পত্নীপ্রেমিক জামাইও রেহাই পেত না টিপ্পনীর হাত থেকে|

ঠাকুরজামাই, চাকরি কামাই, মাসে দুবার আসে,

না জানি সে ঠাকুরঝিকে কত ভালোবাসে|

আবার পাগল জামাই হলে বধূর পরিবর্তে অর্ধচন্দ্র জোটাও অসম্ভব ছিল না|

না দিব গৌরীর বিয়া, কার বা বাপের ডর|

ড়ঙ্কা মাইর‍্যা পাগল জামাই বাড়ীর বাহির কর|

          সমাজকর্তা, গৃহকর্তাদের মধ্যে একটি শ্লাঘনীয় বিষয় ছিল বংশের কৌলীন্য রক্ষা| কুলীন মেয়েদের বিয়ে দেবার সময় একমাত্র বিবেচ্য হত জামাইয়ের কুল| বরের বয়স, আর্থিক অবস্থা, পরিবার পরিজন, আকৃতি, প্রকৃতি, চরিত্র ইত্যাদি কোনোটাই ধর্তব্য ছিল না| এ হেন জামাইকে শ্বশুরবাড়ীর অন্দরে সাদরে গ্রহণ করা হত বলে মনে হয় না|

বিয়ে করে ক্ষীর খেয়ে বেড়ায় ঘরে ঘরে

কুলীনের নাম করলে গা টা নেকার নেকার করে|

আনে কুলীন বাণে মারি কুল কি খাব ধুইয়্যা?

নেড়া খড়ে আগুন জ্বেলে দি কুলীনের মুয়্যা|

অকুলীন জামাইয়েরও অনেক সময়ে অতিরিক্ত চাহিদা থাকে| যতই তাকে দেওয়া-থোওয়া হোক না কেন, তার সন্তুষ্টি আর হয় না|

বা’র বাড়ী শুখার গাছ কড়র-মড়র করে

তারি তলে বসি দামাদ অধিবাস করে|

থালি দিলাম, বাসন দিলাম, তাও দামাদ গোসাই করে|

কখনো আবার জামাইয়ের চাহিদা শালীনতার গন্ডিও অতিক্রম করে যায়|

শালটি শোভা দুইটা পাখি ময়দান গাঙে উড়ে|

কন্যার মা’রে সুন্দর দেখ্যা জামাই গোসা-ই করে|

এহেন জামাই শ্বশুরবাড়ীতে কেমন আদরের প্রত্যাশা করতে পারে?

এসো জামাই বসো খাটে   পা ধোও গড়ের মাঠে

পিঠ ভাঙব চেলা কাঠে     কেঁদে বেড়াবে মাঠে ঘাটে|

চেলাকাঠ ব্যতিক্রম নিশ্চয়| কিন্তু শ্বশুরবাড়ীতে যথেষ্ট খাতির যত্ন সত্বেও নিজবুদ্ধির দোষে জামাই শেষ পর্যন্ত উপহাসাস্পদ হয়ে ওঠে|

তালতলায় আসি জামাই তালের লড়ি পাইল

ঘাটার আগায় আসি জামাই মোড় কলসী পাইল

বড় উঠানে আসি জামাই আঁক প্রদীপ পাইল

ভিতর উঠানে আসি জামাই বেদীর লগন পাইল

বারান্ডাতে উঠি জামাই ধানে দূর্বা পাইল

হাতিনাতে উঠি জামাই দুধে কলা খাইল

পাকঘরে খাইয়া জামাই রাঁধনীরে পাইল

উয়াইর তলে যাইয়া জামাই বিলাইর লাথি খাইল|

অনেক সময়েই দেখি পুজো-আচ্চা বার-ব্রতের বিপরীত দিকে চলছে বাংলার লৌকিক ছড়া| যে বাড়ির মেয়েদের নিরামিষ খেয়ে জামাতা বাবাজীবনের জন্য রকম রকম মাছ আর মাংসের পদ রান্না করতে হয়, আর সে পদ আদরের মেয়েকে খেতে দেওয়া যায় না, কারণ তারও তো সেদিন ষষ্ঠী, তাদের তো জামাইকে নিয়ে আদিখ্যেতা করার কোনো কারণ অন্তর থেকে থাকতে পারে না|